কবিতা

গড়িয়া স্টেশন



রতন হাওলাদার


দাঁড়িয়ে আছে হরপ্পা মহেঞ্জদরোর মত গড়িয়া স্টেশন।
ডাউন আর আপে ছুটে যাচ্ছে লোকাল ট্রেন।
থিকথিকে ভীড়! রুটি রুজির অভিনব তাড়না।
সহযাত্রী আমিও ওদের দলে। আয়লা থেকে আজো।
এতদিন তুমি শাড়ি ছিলে, আজকে কুর্তী এবং প্লাজো।

জীবন কখনই কবিতার মত হতে পারে না
হতে পারে না মসৃণ সমুজ্জ্বল ছায়াপথের মত
খানাখন্দ ঘাত প্রতিঘাত উৎরাই চড়াই থাকবে যত
জীবন হয়ে উঠবে ছন্দোময় ঝঙ্কারী সনেটের মত।
কত শব্দ সুন্দরী - নিঃশব্দে হয়ে গেল নিলাম ও নিহত।

আমার হাতে নদী নেই, তবু ওর জন্য গভীর ভালোবাসা
আমার হৃদয়ে বাসা বাঁধেনি ফুল পাখি আকাশ বৃষ্টি
তবুও ওদের জন্যে উদগ্র অনুরণন অচঞ্চল অবেলায়
জীবনের দিগন্তে বর্ণাঢ্য গোধূলি রাঙিয়ে যায় পূর্বকাল।
আমি আমার মর্গে করছি ব্যবচ্ছেদ! লিখছি সুরতহাল।

আরো একবার তোমার চোখের জলে পবিত্র হতে চাই
ধুয়ে ফেলতে পারি হৃদয়ের ক্লেদ মায়া এবং মলিনতা
বুকের খাঁচার দু একটা হাড় দিয়ে রচে যেতে চাই কাব্য
ভাবি পৃথিবীর অলিগলিতে লুক্কায়িত লাবণ্য মঞ্জিমা।
যদি চাও আঁখির অবভাসে এঁকে দিয়ে যাবো মধুরিমা।

মাটি ভিজে যাচ্ছে - সবুজ থেকে হলুদ হয়ে যাচ্ছে ঘাস
হিল্লোলিত বন বীথিকায় ফুটেছে কবিতা মঞ্জরী
জবা টগর যুঁই মল্লিকা মাধবীলতার কুঞ্জে থাকে জীবন
চড়ুই শালিক টুনটুনি ঘুঘু কাকেরা শোনায় জীবন গীতি।
দাঁড়িয়ে থাকা যুদ্ধে! গড়িয়া স্টেশন - হয় জীবনস্মৃতি।