মাঝরাতে রোজ বেজে উঠছে সিটি
পাশের কোনো বাড়ি থেকে, প্রেসার কুকারের।
বেজেই চলেছে সিটি এতো রাতে
ওষুধে আছন্ন ঘুম ভেঙ্গে যায়।
অস্থির পেঁচাদের বাসায় ফিরিয়ে
ঘুমে অচেতন তবুও শহর।
একদিন ঠিক করলাম
ধরবো এই সিটিওয়ালাকে।
কিন্তু কাকে ধরবো?
এ কি শব্দ দূষণের আওতায় পড়ে?
একদিন যায়, দু''দিন যায় -
শেষমেষ ধরলাম সেই সিটিওয়ালাকে।
তুমি কি রোজ মাঝরাতে সিটি বাজাও?
হ্যাঁ কাকু, কী করবো? একটু সস্তার মটর
গলতে চায় না মোটেই।
ডান হাতের বড় ভারী ঝোলাটা
বাঁ হাতে সরিয়ে নিয়ে বলল ছেলেটা।
আরে তুমি তো গতবার উচ্চমাধ্যমিকে স্টার পেলে না?
হ্যাঁ, কী করবো কাকু,
বাবা তো চলে গেলেন করোনায়।
অসুস্থ মা'কে নিয়ে কি যে করি?
মা ঘুগনি বেঁধে দেয়
দূরে অফিসে অফিসে বিক্রি করি
তারপর কলেজে যাই।
কাউকে বলবেন না কাকু। প্লিজ!
কেউ জানে না। আমি যাই।
এই সস্তা রাজনীতি করা সমাজের
এক প্রতিনিধি আমি।
মনে হল আমার দু'গালে
সপাটে চড় কষিয়ে গেল কেউ।
মাঝরাতে সিটি রোজই বেজে ওঠে।
ঘুম ভেঙ্গে যায়, আর আসে না।
এভাবে বেশ কিছুদিন -
তারপর আর তো বাজেনা সিটি।
না, রাতেও না, দিনেও না।
মাঝরাতের সিটি নেই কেন?
মন ভাঙ্গানোর ঘুম ভাঙ্গানোর
সিটি নেই কেন?
কানে কি কম শুনছি?
শুনলাম ছেলেটি আর নেই!
কিছুদিন হাসপাতালে থাকার পর
মর্গে পড়ে আছে তার দেহ।
খুন, না আত্মহত্যা, না দুর্ঘটনা -
বিশ্লেষণে ব্যস্ত গণমাধ্যম!
লড়াইয়ে ব্যস্ত রাজনীতি।