প্রবন্ধ ও নিবন্ধ

ব্রতচারী সন্‌জীদা খাতুন (১৯৩৩-২০২৫): বাঙালির চিরকালীন আলোক-বর্তিকা



নীরু শামসুন্নাহার


বাংলাদেশের তরুণ ও যুবসমাজকে দেশপ্রেমিক ও অসাম্প্রদায়িক নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার জন্য - 'ব্রতচারী সমিতি, বাংলাদেশ' নামক প্রতিষ্ঠানটি অধ্যাপক সন্‌জীদা খাতুনের নেতৃত্বে ২০০৪ সালে পুনরায় আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যক্রম শুরু করে। নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও সন্‌জীদা খাতুনের সভাপতিত্বে 'ব্রতচারী সমিতি, বাংলাদেশ' লোকসংস্কৃতি নির্ভর শরীর ও মানস গঠনের চর্চা করেছে, করে চলবে। গুরুসদয় দত্তের মুক্তির মন্ত্র দেশের নতুন প্রজন্মের কানে প্রবেশ করুক, তারা মনে প্রাণে স্বাধীন চিত্তের সাধনায় প্রবৃত্ত হোক। ব্রতচারণ শুরু হোক দেশের সর্বত্র — এই ব্রত গ্রহণ করেছিলেন সন্‌জীদা খাতুন।

সন্‌জীদা খাতুনের চেতনায় বাংলাদেশের তরুণদের ব্রতচারী প্রশিক্ষণ প্রশিক্ষিত করার বিষয়টি বিবিধ কারণে দানা বাঁধে। আচার্য গুরুসদয় দত্ত বাঙালির নিজস্ব ইতিহাস - ঐতিহ্য রচনার মধ্য দিয়ে 'ব্রতচারী' নামে এক প্রবল সাংস্কৃতিক আন্দোলন গড়ে তোলেন। বিগত শতকের ত্রিশের দশকে তাঁর গড়ে তোলা সাংস্কৃতিক আন্দোলনের প্রত্যক্ষ প্রভাব বঙ্গ-ভারতে - বিশেষ করে বাঙালির সংস্কৃতি জগতে আলোড়ন তুলেছিল। আচার্য গুরুসদয় দত্তের 'ব্রতচারী আন্দোলন' সে-সময়ে নিজস্ব সাংস্কৃতিক পরিচয় প্রতিষ্ঠায় দুই বাংলার হিন্দু-মুসলিম নির্বিশেষে বাঙালি তরুণ ও যুবকদের স্বাজাত্যবোধের চেতনায় স্বাধীন মাতৃভূমি প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন বাস্তবায়নে প্রবলভাবে উদ্বুদ্ধ করে।


লেখিকার সঙ্গে সন্‌জীদা খাতুন।

আচার্য গুরুসদয় দত্ত প্রতিষ্ঠিত ব্রতচারী অন্দোলনের মানবতাবাদী এবং দেশপ্রেমমূলক চেতনা বাংলাদেশের তরুণদের চিন্তা-চেতনার গভীরে প্রবাহিত করে অসাম্প্রদায়িক, উদার, মানবিক এবং দেশপ্রেমিক জনগোষ্ঠী নির্মাণে সন্‌জীদা খাতুনকে প্রবলভাবে প্রভাবিত করে। তিনি বুঝতে পেরেছিলেন, বাংলাদেশে উদার, মানবতাবাদী এবং দেশপ্রেমিক জনগোষ্ঠী সৃজনে আচার্য গুরুসদয় দত্ত প্রবর্তিত ব্রতচারী প্রশিক্ষণই উপযুক্ত মাধ্যম। চাকুরীজীবনে স্বাধীনচেতা মানুষকে নানা দুর্ভোগের শিকার হতে হয়। পরাধীন দেশে বিড়ম্বনার তো কোনো শেষ নেই। আবার স্বাধীন বাংলাদেশেও কত অপ্রত্যাশিত আচরণের মুখোমুখি হয়েছেন। সরকারি আদেশ বা ইঙ্গিত নয়, নিজ বিবেকের নির্দেশেই সবসময় চলেছেন গুরুসদয় দত্তজীর একাত্ম অনুসারী সন্‌জীদা খাতুন। একনিষ্ঠ ব্রতচারীর ব্রত অনুসরণ করেছেন আজীবন।

ব্রতচারী বিষয়ে তাঁর রচনা থেকে উদ্ধৃত করছি —

"মুকুল ফৌজের মাঠে কামরুল ভাই (কামরুল হাসান)-এর শেখানো ব্রতচারী দেখে মুগ্ধ হয়েছিলাম প্রথম। ছেলেদের "বাংলা মা'র দুর্নিবার আমরা তরুণ দল" গানের সঙ্গে সাবলীল ভঙ্গির পদচারণা আর চমৎকার নৃত্য ভুলবার নয়। মেয়েদের কাঠি নাচ, রুমাল উড়িয়ে গাওয়া জারি ও "কাইয়ে ধান খাইলোরে/খেদানোর মানুষ নাই", আর গোল হয়ে তালে তালে পা ফেলে একবার সামনের ঝুঁকে একবার পিছনে পা ফেলে গাওয়া "বাংলাভূমির প্রেমে আমার প্রাণ হইল পাগল" বড় ভালো লেগেছিল আমার। পরে আমাদের বোন ফৌজ গড়ে আমি নিজেই দেশকে ভালোবাসবার "বাংলাভূমির প্রেমে আমার..." নাচ গানটি করিয়েছি ছোটদের দিয়ে। ব্রতচারীর ওই গানগুলো সেসব দিনে শুনে শুনেই শেখা। মাঝে দীর্ঘ সময় ব্রতচারীর গান শুনিনি। যদ্দুর মনে পড়ে স্বাধীনতা আন্দোলন জমে উঠবার পরে "বাংলা মা'র দুর্নিবার আমরা তরুণ দল" গানটি 'ছায়ানট সঙ্গীত বিদ্যায়তন-এর অন্যতম দৃপ্ত গান হয়ে গীত হতে লাগল। এমনকি নতুন ছত্রও সুবিধে মতো তাতে জুড়ে দেওয়া হল "লালন সাঁই নজরুলের ছন্দভঙ্গিমা"। এছাড়া "মানুষ হ' মানুষ হ' আবার তোরা মানুষ হ'/ অনুকরণ খোলস ভেদি কায়মনে বাঙ্গালি হ", বাঙালিকে স্বভাবে ফিরিয়ে আনবার যোগ্যতম গান হিসেবে বারংবার উচ্চারিত হতে থাকল। মকুল ফৌজের কামরুল ভাই এগিয়ে এলেন বাঙালির জাগরণের জন্য মন্ত্রশক্তির মতো গানগুলোর নেতৃত্ব দিতে। শেখালেন "শিক্ষা বলি কাকে, আমরা শিক্ষা বলি কাকে?" শেখালেন "জন্ম হবার সময় থেকে বয়সটা চলে বেড়ে"। দ্বিতীয় গানটির শিক্ষা বয়সটা তো আর থামিয়ে রাখা যাবে না! জাগিয়ে রাখতে হবে তরুণ প্রাণটিকে। ধুয়ার মতো গানটিতে বলা হতো - "তরুণতা, তরুণতায় করো জীবন পূর্ণ।"

স্বাধীনতার পরে কামরুল ভাই ব্রতচারী প্রশিক্ষণের একটি শিবির করেছিলেন, ঢাকার এসওএস শিশুপল্লীতে। এছাড়া চট্টগ্রামেও ব্রতচারী শিক্ষার আয়োজন হয়েছিল বলে শুনতে পাই। সবচেয়ে বিস্ময়কর ঠেকেছিল, পাকিস্থান আর্মিতেই ব্রতচারী চর্চা হত শুনে। তার পিছনেও ছিলেন কামরুল ভাই। জেনারেল ওসমানীদের মতে, "বীর বাঙালিরা বাঘা ফিল্ড মার্শাল আইয়ুব খানের সামনেও ব্রতচারী নৃত্যগীত করিয়েছেন অকুতোভয়ে"।

(ব্রতচারী আন্দোলন ও গুরুসদয় দত্ত, সন্‌জীদা খাতুন, ব্রতচারী আন্দোলন, সম্পাদক— নীরু শামসুন্নাহার, বই প্রকাশন, কলকাতা, প্রকাশকাল- বইমেলা ২০২৫)


গুরুসদয় দত্ত

গুরুসদয় দত্তের ব্রতচারী আন্দোলন "বাংলার ব্রতচারী সমিতি" নামে সংগঠিত রূপে বাংলার নিজস্ব ভাষা, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিবোধ নির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ প্রাতিষ্ঠানিক ভূমিকা পালন করে। বঙ্গবন্ধুর 'অসমাপ্ত আত্মজীবনী' গ্রন্থে সে কথা জাতির পিতা স্বয়ং উল্লেখ করেছেন। একটি সুস্থ মানসিকতা সম্পন্ন দেশপ্রেমিক জাতি গঠনে দেশের লোক-ঐতিহ্য কতটা কার্যকর সে কথা বঙ্গবন্ধু তাঁর জীবনের প্রারম্ভেই উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন। সেই উপলব্ধি থেকেই জাতির পিতা সদ্য স্বাধীন দেশে ১৯৭৩ সালে নবোদ্যমে গুরুসদয় দত্তের সরাসরি শিষ্য পটুয়া কামরুল হাসানকে ব্রতচারী প্রশিক্ষণ কর্মসূচি পুনরায় চালু করতে আহ্বান জানিয়েছিলেন। ব্রতচারী প্রশিক্ষণ কর্মসূচির প্রধান উপদেষ্টা ছিলেন সদ্যস্বাধীন বাংলাদেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। পটুয়া কামরুল হাসান ১৯৭৩ সালের ১ ফেব্রুয়ারি শাহীন স্কুলে ব্রতচারী'র ৩ সপ্তাহব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মসূচি শুরু করেন। প্রধান উপদেষ্টা প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমান ব্রতচারী প্রশিক্ষণ কর্মসূচি পরিদর্শনকালে বাংলাদেশের সমস্ত স্কুলে ব্রতচারী প্রশিক্ষণ চালু করার কথা ঘোষণা করেন। ১৯৭৩ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি সপ্তাহব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মসূচির সমাপনী দিনে প্রধান অতিথি হিসেবে তৎকালীন অর্থমন্ত্রী জাতীয় নেতা জনাব তাজউদ্দীন আহমদ তাঁর ভাষণে বলেছিলেন, "ব্রতচারী কর্তব্য জীবনের সর্বস্তরে বাস্তবায়ন চাই।" (সূত্র: দৈনিক পূর্বদেশ, ২৩ ফেব্রম্নয়ারি) কিন্তু ১৯৭৫ সালে রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে নিহত হওয়ার ফলে সদ্যস্বাধীন বাংলাদেশে ভয়াবহ রাজনৈতিক বিপর্যয় নেমে আসে। ১৯৮৮ সালের ২ ফেব্রুয়ারি পটুয়া কামরুল হাসানের আকস্মিক মৃত্যুর পর সামরিক সরকারের শাসনকালে দেশে ব্রতচারী চর্চা স্থবির হয়ে পড়ে।

পরবর্তী পর্যায়ে ২০০৩ সালে অধ্যাপক সন্‌জীদা খাতুন উপলব্ধি করেন যে, বাঙালির লোকসংস্কৃতি রক্ষা-কবচ হিসেবে ব্রতচারী চর্চার কোনো বিকল্প নেই। এই গভীর উপলব্ধি থেকে তিনি দেশের শিশু থেকে শুরু করে তরুণ ও যুবসমাজকে ব্রতচারী প্রশিক্ষণ প্রদানের উদ্যোগ গ্রহণ করেন। এরই ফলশ্রুতিতে ২০০৩ সালের জুলাই মাসে ব্রতচারী প্রশিক্ষণ প্রাতিষ্ঠানিকভাবে শুরু করা হয়। ২০০৪ সালে ঢাকায় কেন্দ্রীয় "ব্রতচারী নৃত্যোৎসব পরিষদ" গঠন করে ২৩ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৯ ফেব্রুয়ারি পর্যস্ত ৭ দিনব্যাপী প্রথম জাতীয় ব্রতচারী প্রশিক্ষণ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয় টাঙ্গাইলের "সরকারি শিশু পরিবার" আবাসিক বিদ্যালয়ে। একই বছরে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে গুরুসদয় দত্ত প্রতিষ্ঠিত "ব্রতচারী গ্রাম" পরিচালিত আন্তর্জাতিক প্রশিক্ষণ কর্মশালায় বাংলাদেশের কয়েকজন ব্রতচারী প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করেন। দেশে এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গের জোকায় ব্রতচারী গ্রামে প্রশিক্ষণ পরবর্তী পর্যায়ে প্রশিক্ষকদের সমন্বয়ে ওই একই বছরে ঢাকায়, 'ব্রতচারী সমিতি, বাংলাদেশ' প্রাতিষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু করে।

১৯৭১ সাকের ১৬ ডিসেম্বর বিজয় অর্জনের মধ্য দিয়ে বাঙালির নিজস্ব স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার খুব অল্প সময়ের মধ্যেই ১৯৭৩ সালে জাতির পিতার উদ্যোগে ও পটুয়া কামরুল হাসানের পরিচালনায় স্বাধীন বাংলাদেশে ব্রতচারীর তিন সপ্তাহব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মসূচির উদ্ বোধন করা হয়েছিল। সেই সময় থেকে সামরিক শাসনের সময়কাল বাদে আজ অবধি (১৯৭৩-২০২৫) বাঙালি জাতিসত্তার লোকসংস্কৃতি সংরক্ষণের জন্য সন্‌জীদা খাতুনের একনিষ্ঠ প্রচেষ্টায় প্রতিষ্ঠিত 'ব্রতচারী সমিতি বাংলাদেশ' কর্মশালা, প্রশিক্ষণ ও অভিপ্রদর্শ পরিচালিত করে আসছে।

বাংলাদেশে 'ব্রতচারী' কেন্দ্রীয় প্রতিষ্ঠানের অধীনে অঞ্চলভিত্তিক শাখা গঠন করে অধ্যাপক সন্‌জীদা খাতুন ব্রতচারীর সদস্যদের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলা পর্যায়ে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য ব্রতচারী প্রশিক্ষণ কর্মশালা, অভিপ্রদর্শ আয়োজন, ব্রতচারী বুলেটিন প্রকাশ এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গে নানারকম প্রতিকূলতার মধ্যে বাংলাদেশে বাঙালির হাজার বছরের লোক-সংস্কৃতি রক্ষা ও সেই চেতনায় দেশপ্রেমিক জাতি গঠনে নিজেকে নিয়োজিত করেছেন আমৃত্যু।

মহা মানব-মানবীদের প্রাকৃতিক নিয়মে শরীরী বিলয় ঘটে, কিন্তু তাঁদের আদর্শ, দেশের জন্য আজীবন কর্ম-সাধনার কখনও মৃত্যু হয়না। যুগ যুগ ধরে তাঁদের অপরিমেয় মহৎ কর্ম-সাধনা মানুষ ও তাবৎ প্রাণীকুলের জীবনকে সুন্দরের দিকে ধাবিত করে। যদিও কালের প্রবাহে কখনো কখনো অশুভের কালো মেঘ মানুষের জীবনকে বিষিয়ে তোলে। কিন্তু, তা সাময়িক। দেশের ক্রান্তিকালে দেশের মানুষের চেতনায় তাদের অবিদ্যা ও অজ্ঞতাবশত যে সকল অশুভ শক্তির অনুপ্রবেশ ঘটে সেইসব অশুভ তৎপরতা সন্‌জীদা খাতুনের মতো অপরিমেয় তেজোদীপ্ত জীবনদায়ী মানবীর মানসিক বল, মৃত্যুর মধ্য দিয়েও সত্য ও সুন্দরের সাধনার জয় দেশের আপামর জনগণের আত্মশুদ্ধি ও আত্মজাগরণ ঘটাবে নিশ্চয়।

আজ ১৪৩২ বঙ্গাব্দের প্রথম দিন পহেলা বৈশাখের সূর্যোদয়ের সাথে সাথে সন্‌জীদা খাতুনের আজীবন বাঙালি সংস্কৃতি রক্ষার যে সাধনা নিজে তাঁর জীবনচর্যার মধ্য দিয়ে করে গেছেন, তারই অমল উৎসারণ আমরা দেখতে পাচ্ছি রমনার বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণের আয়োজনে বাংলাদেশের বর্তমান চরম ক্রান্তিকালেও ভয়কে জয় করে, সমস্ত অশুভকে উড়িয়ে দিয়ে বাঙালি মিলিত হয়েছে নববর্ষের প্রাণের উৎসবে।

এভাবেই হাজার বছর ধরে দুই বাংলার পথে-প্রান্তরে যেমন, তেমনি শহুরে নাগরিক জীবনেও আমাদের বাংলা সংস্কৃতির মহীরুহ সন্‌জীদা খাতুনের অচলায়তন ভাঙার মৃত্যুহীন চিরন্তনী প্রাণের জয় ঘোষিত হয়ে চলবে। আমি মনে করি, এখানেই তাঁর চির জীবনের সত্য এবং শুভশক্তির সাধনার জয়রথ দুই বাংলার বাঙালি জাতির জীবনে বার বার ফিরে আসা দুর্দিনে বাঙালিকে অশুভ অপশক্তিকে পরাজিত করে আলোর পথে ধাবিত করবে।

অত্যন্ত ভারাক্রান্ত হৃদয়ে সামান্য পরিসরে সন্‌জীদা আপার মতো মহাবোধীকে নিয়ে এই অতি ক্ষুদ্র স্মারক-রচনাটি আমার স্নেহভাজন সন্দীপ দে'র একাত্ম অনুরোধে পশ্চিমবাংলার আমার ভাই-বোনদের জন্য লিখলাম। অত্যন্ত অল্প সময়ে লেখার ফলে হয়তো ভুল-ত্রুটি রয়ে গেল। পাঠকগণের ক্ষমা পাব এই আশা করছি। ভবিষ্যতে সংশোধনের প্রতিশ্রুতি রইল।

কবিগুরুর কবিতা দিয়ে আমার শিক্ষাগুরুর স্মৃতি-তর্পণ করছি —

"ওগো, তোমার চক্ষু দিয়ে মেলে সত্য দৃষ্টি
আমার সত্যরূপ প্রথম করেছ সৃষ্টি।।
তোমায় প্রণাম, তোমায় প্রণাম,
    তোমায় প্রণাম শতবার।।"...

১৪৩২ বঙ্গাব্দের পহেলা বৈশাখে আমার শিক্ষাগুরুর প্রতি শ্রদ্ধাবনত চিত্তে আমার পরম প্রণতি নিবেদন করছি।

শুভ নববর্ষ, পহেলা বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ।

চিত্রঋণঃ অন্তর্জাল ও লেখিকার কাছ থেকে প্রাপ্ত।

লেখিকা: লোকশিল্পবিদ; প্রাক্তন পরিচালক, বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর; সদস্য, কেন্দ্রীয় কার্যকরী পর্ষদ, ব্রতচারী সমিতি, বাংলাদেশ।