জন্ম ৩ সেপ্টেম্বর, ১৯৪৭। কটকে মামার বাড়িতে। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের এম. এ.। শিক্ষকতা করতেন। প্রধানত গল্প, উপন্যাস লেখেন। বড়দের ও ছোটদের লেখায় সমান পারদর্শী। কলকাতার বাদুড়বাগানের এক সম্ভ্রান্ত পরিবারের সন্তান। মাতা ইলারানি। পিতা প্রীতিকুমার। স্ত্রী বিজলি চক্রবর্তী সুপরিচিত লেখক। বাণীব্রতর লেখায় ঘুরে ফিরে একান্নবর্তী বনেদি পরিবারের ছবি ফুটে ওঠে। লেখকের ভাবনায় একই সঙ্গে যুক্তিবাদ, বিজ্ঞানচেতনা, কাব্যবোধ, সমাজসচেতনতা এবং বিশ্ববীক্ষা পরিস্ফুট। লেখকের বহু গল্প ইংরেজি, হিন্দি ও ওড়িয়া ভাষায় তরজমা হয়েছে।
বাণীব্রত চক্রবর্তী
মন্দাক্রান্তা সেনের জন্ম ১৫ সেপ্টেম্বর ১৯৭২, কলকাতায়। জীবনে সবচেয়ে বেশি প্রত্যক্ষ প্রভাব মায়ের। মন্দাক্রান্তা নামটিও মায়েরই রাখা। বাবা অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মী। মাধ্যমিক পর্যন্ত পড়াশোনা সাখাওয়াত মেমোরিয়াল সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ে। উচ্চ মাধ্যমিক লেডি ব্রেবোর্ন কলেজে। তারপর নীলরতন সরকার মেডিকেল কলেজে এম.বি.বি.এস.-এর ছাত্রী। কিন্তু ফাইনাল পরীক্ষার মধ্যিখানে ডাক্তার হওয়ার লক্ষ্য থেকে সরে আসেন। সেই থেকে পুরোপুরি লেখায়। মূলত কবি, লেখালেখির শুরু কবিতা দিয়েই। প্রথম কবিতার বই 'হৃদয় অবাধ্য মেয়ে'। এই কাব্যগ্রন্থ ১৯৯৯ সালের 'আনন্দ পুরস্কার'-এ সম্মানিত হয়।
বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় কবিতার পাশাপাশি ক্রমশ গদ্য লেখার শুরু। প্রথম উপন্যাস 'ঝাঁপতাল', প্রকাশিত হয় ১৪০৭ সনের শারদীয় 'দেশ' পত্রিকায়। বিবাহিত। স্বামী কলকাতা পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চে কর্মরত। তিনিও লেখক। জীবনের গভীরতম বিশ্বাস-ভালবাসায় এবং ঈশ্বরে।
মন্দাক্রান্তা সেন
কবি কৃষ্ণা বসু জন্ম ১৯৪৭ সালের ১৭ নভেম্বর তারিখে। তিনি অধ্যাপনার কর্মজীবন থেকে অবসর গ্রহণ করেছেন।
তিনি সমকালীন বাংলার একজন বিশিষ্ট কবি। তাঁর কবিতায় স্পষ্টভাবে উঠে আসে নারীবাদ, প্রতিবাদ এবং মানবিকতা। আবহমান কাল ধরে চলে আসা পুরুষতান্ত্রীকতার তিনি ঘোর বিরোধী। তিনি আবৃত্তিকার হিসেবেও খ্যাতি অর্জন করেছেন। দেশ-বিদেশের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান থেকে তিনি নিয়মিতভাবে বক্তৃতার আমন্ত্রণ পেয়ে থাকেন।
তাঁর প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থের মধ্যে রয়েছে 'জলের সারল্যে', 'নার্সিসাস ফুটে আছে একা', 'কার্ডিগানে কুসুম প্রস্তাব', 'নবমী নিশির গান', 'অন্যমনস্ক বাতাস ও খোলা পাতা', 'সাহসিনী কে রয়েছো, সাজো', 'সমস্ত মেয়ের হয়ে বলতে এসেছি', 'পরাণ পুতলি পদ্ম', 'ও গান যাও, নাও ভাসাও', 'নির্জন নদীর গান' (ঢাকা থেকে প্রকাশিত, ২০০৯), 'শ্রেষ্ঠ কবিতা', 'কবিতা সংগ্রহ', 'এই নাও মায়া তরবারি', 'কথা নয়, কথার অধিক', 'দর্পণ দর্পণ', 'কবিতাই শীর্ষ-শিল্প', 'শিল্পের সংসারে আছি', 'রক্তাক্ত হৃদয়ের গান', 'পরিযায়ী পাখিদের ডানা', 'দুই নারী দুই জীবন', 'কথাকৃতি', 'ছাপা অক্ষরের ডানা', 'মানুষের ভিতর ক্ষত' প্রভৃতি।
তাঁর প্রাপ্ত সম্মানের মধ্যে রয়েছে 'প্রতিশ্রুতি পুরস্কার', 'সোপান পুরস্কার', 'কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় স্মৃতি পুরস্কার', সুইডেন থেকে প্রাপ্ত 'উত্তরপথ পুরস্কার' (২০০১), 'কবি বিষ্ণু দে স্মৃতি পুরস্কার' (২০০৫), প্রবাসী মার্কিন বাঙালীদের দেওয়া 'উৎসব পুরস্কার' (২০০৮ ও ২০১১), বাংলা অকাদেমির 'আল্পনা আচার্য স্মৃতি পুরস্কার' (২০০৯), দিল্লীর সাহিত্য আকাদেমি থেকে 'রাইটার ইন রেসিডেন্স' সম্মান (২০০৯) প্রভৃতি।
কৃষ্ণা বসু
জন্মঃ ১৯৫৫। প্রশিক্ষিত পরিকল্পনাবিদ। জাতীয় স্তরের পরিকল্পনা প্রণয়ন ও প্রকল্প নিরীক্ষণের পেশায় ঊনিশশো আশির দশকে ভারত সরকারের প্ল্যানিং কমিশনে কর্মজীবনের সূচনা। প্ল্যানিং কমিশনের ঝাঁপ বন্ধ হওয়ার অব্যবহিত পরেই পেশাগত কর্মজীবনের সমাপ্তি।
পেশাগত দক্ষতার জন্য রাষ্ট্রপুঞ্জের আমন্ত্রণে এবং ভারত সরকারের অনুজ্ঞায় আফগানিস্তান সরকারের উপদেষ্টা পদে কাজ করার সুবাদে অর্জিত হয়েছে সন্ত্রাস বিধ্বস্ত কাবুলে বসবাসের দুর্লভ অভিজ্ঞতা। পড়াশোনার প্রয়োজনে এবং কর্মসূত্রে দেশ-বিদেশের নানান স্থানে বসবাস ও বিভিন্ন দুর্গম জায়গায় নিয়মিত যাতায়াতে সমৃদ্ধ হয়েছে স্মৃতির ঝাঁপি।
বিভিন্ন বিষয়ের নিবিড় পাঠক হলেও বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত মৌলিক ও অনুবাদ গল্প-নিবন্ধ-ভ্রমণ আলেখ্যর সংখ্যা খুব একটা কম নয়। নানারকম বিষয়ে রচিত অনেকগুলি বইয়ের মধ্যে আজিকার ভারত (অনুবাদ), বিলিতি বৃত্তান্ত, বাংলার সড়ক সেতুর ইতিহাস, বাংলার শিল্পব্যবস্থার বিবর্তন, কাবুলনামা, গাবো: গাবরিয়েল গার্সিয়া মার্কেস্-এর জীবন ও সৃজন, মার্কেস্-এর গল্পসমগ্র (অনুবাদ), প্রতিবেশীর প্রাঙ্গণে, বিকাশ বনাম বিনাশ, আহোম রাজের খোঁজে, জোয়াই, চেনা দিল্লি অজানা আখ্যান, অন্য পথ ভিন্ন কথা জনপ্রিয়। কাবুলনামা-র ইংরেজি অনুবাদ পাঠক-সমালোচকের নজর কেড়েছে।
অমিতাভ রায়